ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা, বিভিন্ন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন সভ্যতা, মেহেরগড় এবং সিন্ধু সভ্যতা

  ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা


ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষের বসবাস - আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব 5 লক্ষ বছর আগে.

প্রাগৈতিহাসিক যুগের আরেক নাম - প্রস্তর যুগ ( এই যুগে মানুষ পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত).

প্রস্তর যুগের শ্রেণীবিভাগ - তিনটি 1 প্রাচীন প্রস্তর যুগ 2 মধ্য প্রস্তর যুগ 3 নব্য প্রস্তর যুগ


1) প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল - আনুমানিক 80000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 10000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত.

2) মধ্য প্রস্তর যুগের সময়কাল - আনুমানিক 10,000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 6000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত.

3) নব্য প্রস্তর যুগের সময়কাল - আনুমানিক 6000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 2500 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত.

নব্য প্রস্তর যুগের শেষের দিকে শুরু হয় তাম্র প্রস্তর যুগ ( তামা ও ব্রাঞ্চের ব্যবহারের সাথে পাথরের ব্যবহার করতে থাকে)


বিভিন্ন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন সভ্যতা





রোমান সভ্যতা - তাইবার নদীর তীরে

মিশরীয় সভ্যতা - নীল নদের তীরে

সুমেরীয় সভ্যতা - ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীর তীরে

সিন্ধু সভ্যতা - সিন্ধু নদীর তীরে

চৈনিক সভ্যতা - হোয়াংহো নদীর তীরে



মেহেরগড় এবং সিন্ধু সভ্যতা


মেহেরগড় সভ্যতা (7000 - 2000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ)

আবিষ্কারক :- যা ফ্রঁসোয়া জারিজ ও রিচার্ড মিডো (1974)

বিস্তার:- ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর- পশ্চিম অংশের বোলান গিরিপথ এবং বালুচিস্তানের (পাকিস্তান) দক্ষিণ উপত্যকা থেকে শুরু করে সিন্ধু নদের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত এই সভ্যতার বিস্তার ঘটে ছিল

বৈশিষ্ট্য:- i) মেহেরগড় সভ্যতার উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র গুলি ছিল - মেহেরগড়, কিলেগুল মোহাম্মদ, রানাঘুনডাই, কোটদিজি, নৌসেরা, কাচ্চিবেগ প্রভৃতি।

ii) মেহেরগড় সভ্যতার সময় মানুষ তামা ব্যবহারে সক্ষম হয়।

iii) পোড়ামাটির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। অলংকার শিল্প উৎকর্ষতা লাভ করে।

iv) আফগানিস্থান, পশ্চিম এশিয়া, ইরান ও মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে মেহেরগড় সভ্যতার বাণিজ্যিক লেনদেন চলত।

v) খাদ্যশস্য সঞ্চয়ের জন্য পৃথক শস্যাগারের নিদর্শন পাওয়া গেছে।

vi) গম, বার্লি, খেজুর, তুলো প্রভৃতি শস্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে।

vii) ছোট ছোট মূর্তি, নীলকান্তমণি, লাপিস লাজুলি, শঙ্খ নির্মিত বিভিন্ন ধরনের অলংকার প্রভৃতির দর্শন পাওয়া গেছে।


সিন্ধু সভ্যতা (2600 - 1900 খ্রিস্টপূর্বাব্দ)


সিন্ধু সভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ও সেগুলোর আবিষ্কারক

কেন্দ্র আবিষ্কারক অবস্থান
হরপ্পা (1921 খ্রি.) দয়ারাম সাহানি পাকিস্তানের মন্টোগোমারি ( পাঞ্জাব প্রদেশ) জেলার ইরাবতী বা রাভি নদীর তীরে অবস্থিত।
মহেন জো দারো (1992 খ্রি.) স্যার জন মার্শাল ও রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলা।
চানহুদারো (1931 খ্রি.) ননীগোপাল মজুমদার সিন্ধু নদের তীরবর্তী সিন্ধু প্রদেশ।
সুতকাজেনদোর (1927 খ্রি.) অরেলস্টাইন দোস্ত নদীর তীরবর্তী বেলুচিস্থান প্রদেশ (মাকরান উপকূল)।
রোপার (1953 খ্রি.) ওয়াই ডি শর্মা পাঞ্জাবের শতদ্রু নদীর তীরবর্তী অবস্থিত।
কালিবঙ্গান (1960 খ্রি.) বি কে থাপার রাজস্থান প্রদেশের ঘর্ঘরা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল।
লোথাল (1954 খ্রি.) এস আর রাও গুজরাত প্রদেশের ভোগাবর নদীর তীরে অবস্থিত ছিল । এটি ছিল একটি সামুদ্রিক বন্দর অঞ্চল।
বানওয়ালি (1974 খ্রি.) আর এস বিস্ট হরিয়ানা রাজ্যের অন্তর্গত হিসার অঞ্চলে অবস্থিত।
আলমগিরপুর (1958, 1959 খ্রি.) ওয়াই ডি শর্মা মিরাট জেলার হিন্দন নদীর তীরে
ধোলাভিরা (1967 খ্রি.) জগৎপতি যোশি গুজরাতের কচ্ছ জেলায় অবস্থিত ( লুনি নদীর তীরে ) ।
আমরি (1935 খ্রি.) ননীগোপাল মজুমদার সিন্ধু নদের তীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ।
নবীনতর পূর্বতন